All products
All category
কুষ্টিয়ার তিলের খাজা (Tiler Khaja)
‘হায় রে মজার তিলের খাজা খেয়ে দেখলি না মন কেমন মজা; লালন কয়, বেজাতের রাজা হয়ে রইলাম এ ভুবনে...। অনেকেই বলেন, লালন ফকির দেড় শ’ বছর আগে তিলের খাজা নিয়ে এমন কথা বলেছিলেন। কুষ্টিয়ার বিখ্যাত কি? কুষ্টিয়ার হাজারও ঐতিহ্যের মধ্যে একটি তিলের খাজা।

কুষ্টিয়ার তিলের খাজা (Tiler Khaja)
price
Secure
Checkout
Satisfaction
Guaranteed
Privacy
Protected
Details:
- Warrantyবিক্রিত পন্য ফেরত নেয়া মহানবীর সুন্নাহ্ ।
দুই’শ বছরের ঐতিহ্য কুষ্টিয়ার তিলের খাজা
কুষ্টিয়ার তিলের খাজার নাম শোনেনি বা খায়নি এমন মানুষ বাংলাদেশে পাওয়া মুশকিল। কুষ্টিয়া সদর ও কুমারখালী উপজেলাতে এ পেশার সাথে জড়িত কয়েকশ’ পরিবার। হাতে তৈরি খেতে দারুণ সুস্বাদু কুষ্টিয়ার এ তিলের খাজা দুইশ’ বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। খাবারটি কুষ্টিয়ার নামের সাথেই মিশে আছে। ক্রেতা আকৃষ্ট করতে নানা রকম হাঁকডাকের মাধ্যমে রেলওয়ে স্টেশন, বাস স্টেশন ও লঞ্চঘাটসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হতে দেখা যায় কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজা।
কুষ্টিয়ার মুখরোচক এই তিলের খাজা এখন পরিণত হয়েছে ক্ষুদ্র শিল্পে। সারা বছরই তৈরি করা হয় তিলের খাজা। তবে শীত মৌসুমে এর আলাদা কদর রয়েছে। এপ্রিল- জুলাই মাস পর্যন্ত চলে তিলের খাজা মৌসুম। কুষ্টিয়ার হাজারও ঐতিহ্যের মধ্যে একটি তিলের খাজা। কুষ্টিয়ার তিলের খাজার নাম শুনলে জিভে পানি আসে না এমন লোকের সংখ্যা কমই আছে। এক সময় শুধু স্থানীয় চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে তিলের খাজা তৈরি করা হতো। কালের আবর্তে এর কদর বেড়েছে দেশজুড়ে। এটি এখন পরিণত হয়েছে একটি খাদ্য শিল্পে। এ ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেছে বাড়তি লোকের কর্মসংস্থান। এসব ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংক প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক সুবিধা সৃষ্টি করা হলে এই শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। কিন্ত সে সুবিধা না থাকার কারণে সম্ভাবনা সত্ত্বেও প্রসার ঘটছে না এই ক্ষুদ্র শিল্পের। দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক অনটন আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে এ শিল্প। এরপর আবার নতুন করে মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাব। সব মিলিয়ে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছে এ পেশার মানুষ।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, অখণ্ড ভারতীয় উপমহাদেশের সময়কালেই তিলের খাজার প্রচলন ঘটে কুষ্টিয়ায়। ভারত পাকিস্তান বিভক্ত হওয়ার আগে শহরের মিলপাড়ায় ও দেশওয়ালী পাড়ার পাল সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি পরিবার তিলের খাজা তৈরি শুরু করে। এরপর বিভিন্ন সময়ে জেলার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ার আবদুল মজিদ, চাঁদ আলী, সাইদুল ইসলাম, ইদিয়ামিন, সরওয়ারসহ আরো কয়েকজন মিলে কারখানায় তিলের খাজা তৈরির ব্যবসা করে এ শিল্পের দুই শ’ বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। তবে পরে কুমারখালী উপজেলার চাঁপড়া ইউনিয়নে লালন শাহের মাজারের আশপাশেও বেশ কয়েকটি তিলের খাজার কারখানা গড়ে উঠেছে। তবে করোনা মহামারিতে ব্যাপক ক্ষতি হওয়াতে বড় ধরনের অর্থ সঙ্কটে পড়েছে কারখানার মালিকরা। তারা বলছেন, সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হলে দ্রুতই ক্ষতি কাটিয়ে উঠে আবার ব্যবসার প্রাণচাঞ্চল্যতা ফিরিয়ে আনা যেত।
এখন মিলপাড়াতে বিখ্যাত ‘ভাই ভাই তিলের খাজা’ নামের একটিই মাত্র কারখানা রয়েছে। এ কারখানার বয়স আনুমানিক ৩৭ বছর। দেশে চলমান মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর সীমিত আকারে কারখানাটি চালু হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে এখানকার শ্রমিকরা। সব মৌসুমেই রাতে তৈরি হয় তিলের খাজা, আর দিনে রাতে সব সময় বিক্রি হয়।
ছেঁউড়িয়ার আবদুল মজিদ এই মুহূর্তে কুষ্টিয়ার তিলের খাজা কারখানা পরিচালনায় সবচেয়ে প্রবীণ কারিগর। প্রায় ৪৫ বছর ধরে তিনি এ ব্যবসা করছেন। ‘১ নম্বর নিউ স্পেশাল ভাই ভাই তিলের খাজা’ কারখানায় আছেন অর্ধশতাধিক শ্রমিক-মালিক।
আবদুল মজিদ বলেন, ‘এ ব্যবসাটি কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যের অংশ। দেশ-বিদেশ থেকে অনেকে আসেন এখানকার তিলে খাজার কারখানায়। তারা বিভিন্ন তথ্য নেন। একে এখন শিল্পের মর্যাদায় আনতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘সার্বিক সহায়তা দিয়ে এ শিল্পকে আরও শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে।’
তিলের খাজা তৈরির প্রধান উপকরণ তিল ও চিনি। চুলায় চাপানো বড় লোহার কড়াইয়ের মধ্যে চিনি দিয়ে গণগণে আগুনে জাল দিয়ে তৈরি হয় সিরা। নির্দিষ্ট তাকে আসার পর নামানো হয় চুলা থেকে। হালকা ঠাণ্ডা হলে চিনির সিরা জমাট বেধে যায়, তখন শিংয়ের মত দো-ডালা গাছের সাথে হাতে টানা হয় জমাট বাধা চিনির সিরা। এক পর্যায়ে বাদামি থেকে সাদা রঙে পরিণত হলে কারিগর বিশেষ কায়দায় হাতের ভাঁজে ভাঁজে টানতে থাকে। তখন এর ভেতরে ফাঁপা আকৃতির হয়। সিরা টানা শেষ হলে রাখা হয় পরিস্কার স্থানে। নির্দিষ্ট মাপে কেটে তাতে মেশানো হয় খোসা ছাড়ানো তিল। এভাবেই তৈরি হয়ে গেল তিলের খাজা। পরে এগুলো প্যাকেটজাত করে পাঠিয়ে দেয়া হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে।
related_products:
Hello! 👋🏼 What can we do for you?
04:58